ওই রোগীর কোভিড না হলেও শরীরে মিউকরমাইকোসিস শনাক্ত হয়েছে। বর্তমানে মেডিসিন বিভাগের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর শরীরে অন্যান্য রোগ আছে। এই নারীসহ চট্টগ্রামে মোট তিনজন ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগী শনাক্ত হলো।
চট্টগ্রামে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত আরেক রোগী শনাক্ত হয়েছে। শনাক্ত ব্যক্তির বয়স ৪৮ বছর। তিনি পেশায় একজন পরিবহন ব্যবসায়ী বলে জানান চিকিৎসকেরা। ৬ আগস্ট ৪৮ বছর বয়স্ক ওই পুরুষ রোগী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁর আগের দিন পরীক্ষায় ওই ব্যক্তির শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ধরা পড়ে।
চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত নারীর শরীরে অ্যামফোটেরিসিন-বি’ ইনজেকশন দেওয়া শুরু হয়েছে। শনিবার দুপুর থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তার শরীরে এ ইনজেকশন দেওয়া শুরু করেন। চিকিৎসকেরা বলছেন, প্রতিদিন ৫ ভায়াল করে ১৫ দিন এই ইনজেকশনটি তাঁর শরীরে প্রয়োগ করতে হবে।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমণের ঝুঁকি কাদের বেশি এর উত্তর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন ক্যানসার আক্রান্ত রোগী, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি প্রতিস্থাপন করা রোগী এবং স্টেরয়েড গ্রহণ করা ব্যক্তিরা এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের এই রোগ হবে না বলে জানান তারা।
প্রথমবারের মতো পাওয়া এই রোগী বর্তমানে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক অনিরুদ্ধ ঘোষের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। অধ্যাপক অনিরুদ্ধ বলেন, মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস আগেও ছিল। কোভিড থেকে সেরে ওঠার পর দেশে কয়েকজনের শরীরে রোগটি ধরা পড়ায় আলোচনা হচ্ছে। মূলত যাঁদের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কম তাঁদের এ
ষাটোর্ধ্ব বছরের এই নারী বর্তমানে হাসপাতালে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি গত বেশ কয়েক দিন যাবৎ এখানে ভর্তি থাকলেও আজকেই আমরা নিশ্চিত হই তিনি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত
ওই নারীর শরীরে কোভিড পরবর্তী নানা জটিলতা দেখা দেয়। এ অবস্থায় স্বজনরা তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস আক্রান্তের নানা লক্ষণ দেখা যায়...
ভারতে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে এই ছত্রাকের সংক্রমণ বেশি দেখা যাচ্ছে। করোনার বিপর্যয়ের মধ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নতুন আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে দেশটিতে।
ভারতে সরকারি হিসাবে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৭১৭ জন। সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ৮৫৯ জন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে গুজরাটে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে
মিউকরমাইকোসিস এক ধরনের গুরুতর ফাঙ্গাল ইনফেকশন বা ছত্রাকজনিত সংক্রমণ। দীর্ঘস্থায়ী (ক্রনিক) কোনো শারীরিক জটিলতা থেকে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়লে এই ছত্রাকের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
এ ছাড়া আরও একজনের মৃদু উপসর্গ থাকায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ
গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে নতুন করে করোনার রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১ লাখ ৯৬ হাজার ৪২৭ জন। যা গতকাল সোমবারের তুলনায় প্রায় ২৬ হাজার কম। সর্বশেষ এই সংখ্যাসহ মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৬৯ লাখ ৪৮ হাজার ৮৭৪ জনে।
করোনা আক্রান্ত রোগীকে মাত্রা না বুঝে স্টেরয়েড দিলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে, যার ফলে রোগীর ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়
প্রতিবেশী ভারতে ছড়িয়ে পড়া নতুন এই মরণব্যাধি যাতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য প্রতিটি জেলায় ইতিমধ্যে সতর্কতামূলক নির্দেশনা পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ভারত থেকে যারা দেশে ফিরছেন তাদের মাধ্যমেই এই ছত্রাক ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে